প্রেম করছেন। কিন্তু পকেট গড়ের মাঠ? চিন্তা নেই। খুব কম খরচায় প্রেমিকাকে নিয়ে কলকাতায় ঘুরে বেড়ানোর ১০টি জায়গার ঠিকানা এই প্রতিবেদনে তুলে দিলাম আমরা।
মানুষের মনে যখন প্রেম আসে, সেই সময় সাধারণত পকেট ফাঁকায় থাকে। প্রথমে চাকরি করবো, টাকা রোজগার করবো তারপর সেজেগুজে প্রেম করবো, এমনটা সাধারণত হয় না। সেরকম করতে গেলে সোজাসুজি বিয়ের পিড়িতেই বসা ভালো।
আর সত্যিকথা বলতে কি, খালি পকেটেই প্রেমটা জমে ভালো। কোনও রকমে টাকা জোগাড় করে সেই টাকাতে এক প্লেট চাওমিন কিংবা একটা এগরোল কিনে দু’জনে মিলে চুপি চুপি ভাগ করে খাওয়া – এর মজাটাই আলাদা। পকেটে টাকার জোরে যে প্রেম হয়, সেই প্রেমে এই আনন্দ পাওয়া যায় না।
তাই খালি পকেটের কথা মাথায় রেখেই বন্ধুরা আপনাদের জন্য কলকাতায় এমন কয়েকটি জায়গার ঠিকানা দেওয়া হল – যে জায়গাগুলিতে খুব কম পয়সায় পৌঁছনো যায়। নিশ্চিন্তে, নিরিবিলিতে দু’জনে বসে সময় কাটানো যেমন যায় তেমনই প্রেম করতে খরচও কম হয়। আর এই জায়গাগুলির মধ্যে সবার আগে বলতে হয় প্রিন্সেপ ঘাটের কথা।
প্রিন্সেপ ঘাট
বাবুঘাট-আউট্রাম ঘাট পার করে চক্ররেল লাইনের পাশ দিয়ে পায়ে হেঁটে পৌঁছানো যায় প্রিন্সেপ ঘাটে। হুগলী নদীর তীরে অসাধারোণ একটি জায়গা যেখানে আপনি প্রেমেইকাকে নিয়ে দিব্যি ঘুরে বেড়াতে পারেন। একদিকে গঙ্গার বয়ে যাবার শোভা অপর দিকে নির্জনতা।
ঘন্টার পর ঘণ্টা সময় কাটিয়ে দিতে পারেন। খরচ বলতে আপনাকে বাসে বা চক্ররেলে বা ট্যাক্সি যাতেই আসুন না কেন প্রিন্সেপ ঘাট আস্তে হবে। এখানে কোনো এন্ট্রি ফি নেই। আশেপাশে আপনি পেয়ে যাবে মুখোরচক কিছু খাবারও।
ইকো পার্ক
ইকোপার্ক নামের সাথে সাথেই এখানে পরিস্কার হয়ে যাচ্ছে এখানে পরিবেশের সবটুকুই আছে কিন্তু সবটাই সাজানোভাবে। স্পোর্টস থেকে বিজ্ঞান সবই পাবেন এই পার্কে। এখানে লেকের জলে বোটিং -এর ব্যবস্থা আছে। ইট কাথ পাথরের জঙ্গলকে ভুলে সারাটা দিন এখানে কাতিয়ে যেতে পারেন প্রেমিকাকে নিয়ে।
নির্জনতার বহু জায়গা আপনি পেয়ে যাবে, যেখানে আপনাকে কেউ ডিস্টার্ব করবে না। পরিবেশে কোনো পলিউসন পাবেন না। চারপাশ সবুজ দিয়ে মোড়া। এখানে প্রবেশ মূল্য লাগে। ভেতরে বিভিন্ন রাইডে নির্ধারিত মূল্য আছে। তবে সেটা ব্যয়সাপেক্ষ নয়। আয়ত্বের মধ্যেই।
বনবিতান
এখানে প্রেমিক প্রেমিকাদের ঘনিষ্ঠ হবার সেরা ঠিকানা। রোমান্সের জন্য এই পরিবেশ যেন তৈরি করে রাখা। সল্টলেক বিকাশ ভবনের বিপরীতে এই পার্ক। প্রবেশ মূল্য আছে। সকাল ১০ টা থেকে ৫টা পর্যন্ত খোলা। বিস্তীর্ণ অঞ্চল সবুজে ঘেরা এক জঙ্গল আর চারপাশে বলে গল্প করা করার জায়গা।
নলবন
চারপাশে গাছা দিয়ে ঘেরা এক অপরূপ ঝিল। যাতে আপনারা দুজনে মুগ্ধ হবেনই। এই ঝিলে নানা ধরনের বিনোদনের ব্যাবস্থা আছে। প্রেমিক আর প্রেমিকাদের অবাধ প্রেমালাপের স্বাধীনতা রয়েছে এই নলবনে। এটি মূলত এক্তি বোতিং কমপ্লেক্স। বিধানগরের উল্টোদিকে এর অবস্থা। বাস ট্রেন, ট্যাক্সি সনবই যায় এখানে।
বোটানিক্যাল গার্ডেন
একটি ঐতিহ্যবাহী গাছে ঘেরা নির্জন জায়গা। আড়াইশো বছরের পুরোনো গাছকেও এখজানে রক্ষণাবেক্ষণ করা হচ্ছে। নানা ধরনের গাছ দেখা যায় এখানে। আর সেই সবুজে বসে প্রেম করতে পারলে তো কথাই নেই। হাওড়া শিবপুর অঞ্চলে এই বোটানিক্যাল গার্ডেন।
মিলেনিয়াম পার্ক
একবার টিকিট কেতে ঢুকে পরলেই হোল। গঙ্গার ধারে বসে একান্তে প্রেমিকার সাথে কথা বলতে কেউ বাধা দেবে না।
এলিয়ট পার্ক
কপোত কপোতিদের জন্য এই পার্ক আর একটি আদর্শ জায়গা। দুজনে হেঁটে ঘুরতে পারবেন, আবার একজায়গায় বসে দুদণ্ড গল্পও করতে পারবেন। কোনো টেনশন না নিয়েই।
নন্দন
আড্ডা সিনেমা দেখা বা নাটক এই চত্ত্বরে এলেই আপনি বিনোদনের নানান সুযোগ পেয়ে যাবেন। বসে কথা বলাতেও কোনো বাধা নেই।
ভিক্টোরিয়া
অসাধারণ মার্বেলের তৈরি এক স্থাপত্যকে সাক্ষী রেখে চার পাশের সবুজের মধ্যে ঘুরে বেড়াতে কোনো বাধা নেই। চারপাশ সুন্দর করে সাজানো, আনান বাহারি ফুল ফু্টে আছে বাগানে। আছে দীঘি, স্ট্যাচু । ভিক্টোরিয়া থেকে বেড়োলেই দেখতে পাবেন সারি সারি ঘোড়ার গাড়ি দাঁড়িয়ে রয়েছে।
একবার প্রেমিকাকে নিয়ে উঠে পরতে পারলেই হল। কলকাতারর চার পাশটা ঘুড়িয়ে দেবে। কিছু খরচ হবে, কিন্তু ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে কলকাতায় ঘুরে বেড়ানোর অভিজ্ঞতা চিরদিন স্মৃতির ঝুলিতে উজ্জ্বল হয়ে থাকবে। আর ঘোরা গাড়ি চড়তে চড়তে প্রেমিকার সাথে ঘনিষ্ঠ হতে তো বাধা নেই।
নেচার পার্ক
তারাতলা থেকে কাছেই এই পার্ক। প্রাকৃতিক শোভা, এক বিসাল জলাশয় দিয়ে ঘেরা এই উদ্যান। পিকনিক করতে পারেন, দুজনে এসে সময় কাটাতে পারেন, ভেতরে একতি ছোট্ট চিড়িয়াখানা পাবেন। ঝিলে পাবেন নানা পরিযায়ী পাখি। দু একদিন কাটিয়ে যাবার মত থাকার ব্যবস্থাও এখানে আছে।