রোজকার একঘেয়েমি কাটাতে একটু ঢু মারতে কার না মন চায়। দিন কয়েকের জন্য জায়গার পরিবর্তন হলে মনও পরিবর্তন হয়। একঘেয়েমির ক্লান্তিতে অবশ মন আচকমাই ছুটির আনন্দে চনমনে হয়ে ওঠে। তাই সম্পর্কের টানাপড়েন কম করতে দিন কয়েক কাছে পিঠে বেরিয়ে আসা যেতেই পারে। আপনার ডেস্টিনেশন হতে পারে পাশেরই খয়রাবেড়া ড্যাম (Khairabera Dam)। কিভাবে যাবেন, কোথায় থাকবেন – সব খুঁটিনাটিই দেওয়া রইল নীচে –

Khairabera Dam 3

অঞ্চল- পুরুলিয়া

পুরুলিয়া থেকে দূরত্ব- ৬৭ কিলোমিটার। 

বরাভুম বা বলরামপুর থেকে দূরত্ব – ৩৮ কিমি। সেখান থেকে হাজার টাকার চুক্তিতে একটি গাড়ি নিয়ে বারিরিয়া গ্রামে। সেখানে লজের ব্যবস্থা আছে। এখানে থেকে মাত্র ১৬ কিলোমিটার দুরত্বে যেতে পারেন খয়রাবেড়া ড্যাম (Khairabera Dam)।      

বিবরণ- পুরুলিয়া জেলার বাঘমুন্ডি ব্লকে ছোটবড় পাহাড়ের কোনে অবস্থিত একটি  লেক। পাহাড় এবং বনের মধ্যে একটি সেচ বাঁধ। এটি একটি আকর্ষণীয়  পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলার উচ্চ সম্ভাবনা রয়েছে। এই জায়গাটিতে চেমটো এবং বাররা পাহাড়ের পাদদেশে একটি বিস্তীর্ণ জলাশয় রয়েছে (অজোধ্যা-রেঞ্জ)। বসন্তের সময় (হোলি ঋতু) পলাশ গাছগুলি এক নতুন মাত্রা যোগ করে। পলাশের লাল-ফুল  দিয়ে এলাকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য যেন রঙের বর্ণালী। এখানে পর্যাপ্ত  প্রাকৃতিক  সৌন্দর্য এবং সম্পদ রয়েছে যা আপনার মনে প্রশান্তি এনে দেবে।

বৈশিষ্ট- জায়গাটি সকলের পছন্দ কারণ এর নিস্তবদ্ধতা ও নির্জনতা।

Khairabera Dam 4

ইতিহাস – লালমাটির এই এলাকা ছিল ষোড়শ মহাজনপদের অন্যতম। মধ্যযুগে, এই অঞ্চলটিকে ঝাড়খণ্ডের অংশ বলে ধরা হত। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ১৭৬৫ সালে বাংলা, বিহার, ওড়িশার সুবা দেওয়ানি অনুদান পেয়ে এই অঞ্চলটি অধিগ্রহণ করার আগে পুরুলিয়া সম্পর্কে খুব কমই জানা যায়। এর ঘন বনানী, ছৌনাচ, ধামসা-মাদলের টানে দূর-দূর থেকে ছুটে আসেন পর্যটকরা। কুলকুল করে বয়ে যাওয়া মায়াবী সুবর্ণরেখা-কংসাবতী-দ্বারকেশ্বর। একের পর এক বাঁধ যেন তাদের সঙ্গী। আজও দার্জিলিং, সুন্দরবন, দিঘা-মন্দারমণির মতো পর্যটকের স্রোতের বাইরেই পুরুলিয়া। 

কীভাবে যাবেন-

বিমান পথে- পুরুলিয়ার নিকটতম বিমানবন্দর নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।  প্রায় ২৫০ কিলোমিটার পথ। সেখান থেকে বাস বা ট্রেনে করে পুরুলিয়া যেতে পারেন।

ট্রেনের মাধ্যমে- কলকাতা থেকে পুরুলিয়ার রেলপথে দূরত্ব ৩২২ কিমি। পুরুলিয়া রেলওয়ে স্টেশনটি পুরুলিয়া শহরে অবস্থিত যা দক্ষিণ পূর্ব রেলওয়ে দ্বারা পরিচালিত এবং আদ্রা-টাটা নগর রেল রুটে রয়েছে। পুরুলিয়ার জন্য কলকাতা থেকে ট্রেন নিয়মিত পাওয়া যায়। এই ট্রেনগুলির মধ্যে কয়েকটি হল চক্রধরপুর এক্সপ্রেস (১৮০১১), রূপসীবাংলা এক্সপ্রেস (১২৮৮৩), হাওড়া পুরুলিয়া এক্সপ্রেস (১২৮২৭) ইত্যাদি। কলকাতা থেকে পুরুলিয়া পৌঁছতে একটি ট্রেনের ন্যূনতম সময় ৫ ঘন্টা ২৫ মি।

Khairabera Dam 2

সড়ক পথে – এটি কলকাতা এবং বাঁকুড়া, আসানসোল, বোকারো, জামশেদপুর, রাঁচি এবং রাজ্যের অন্যান্য অংশের মতো আশেপাশের শহরগুলির সাথে সড়কপথে যথেষ্ট ভালভাবে সংযুক্ত।

থাকার জায়গা বা লজ – 

শুভম টুরিস্ট লজ ( যোগাযোগ- ৮০০১৬৮০৮৫৭/ ৯৭৭৫৩৮৯০০১) অযোধ্যা পাহারের কাছে।  

অযোধ্যা হিল ভিউ লজ (যোগাযোগ- ৯০০৭৫০৯৯৫৫/ ৯৮৩০৫১৩০৩৮)

আরণ্যক লজ- (০৯৯৩২৭২৫৫৫৫) 

Khairabera Dam

রাতে থাকার ব্যয়বহুল ব্যাবস্থা- রাত্রিবাসে জন্য ‘খয়রাবেড়া ইকো এডভেঞ্চার  রেসর্ট’ (০৯৮৩০১৬৯৬৯৪)। এখানে থাকা-খাওয়াসহ যাবতীয় সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায়। এখানে থাকার সাউ ব্যবস্থা আছে তবে ভাড়াটা একটু বেশি। প্রায় ৫০০০-৬০০০টাকা প্রতিদিন)

অন্যান্য ব্যবস্থা- এই ক্লাব থেকে ট্রেকিং সাইক্লিং বোটিং ফিসিং করতে পারবেন।  

চাইলে নিরিবিলিতে টেন্ট বা তাঁবু ভাড়া করে সেখানে কাটাতে পারেন।

সতর্কীকরণ- এখানে মাইক বা বাজনা বাজানো নিষেধ। কারণ এখানকার পরিবেশের নৈসর্গিক রূপ, চারপাশে পাখির গান সবকিছুকে বজায় রাখতে হবে যার অদ্ভুত মাদকতা পর্যটকপদের মাতিয়ে রাখবে।   

Previous articleDDLJ in Kolkata: ২৮ বছর পর ফের মুক্তি পেয়েছে DDLJ, কলকাতায় কোথায় দেখবেন
Next articleনায়িকাদের জীবনে আসা গোপন প্রেম কাহিনী