মারমার কাটকাট সুন্দরী। যাকে কিনা ইংরেজিতে বলে ‘হট’! অথচ তারপরেও বয়ফ্রেন্ড না কি বয়ফ্রেন্ড জুটছে না আমেরিকার ২৪ বছর বয়সি হোপ সুইংয়ের (Hope Schwing)। এমন কষ্টের কথা নিজেই ফলাও করে সোশাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন এই সুন্দরী। তারপর আর যায় কোথায়! একের পর এক মন্তব্যের ঝড় বইছে হোপ সুন্দরীর ইনস্টাগ্রামের পাতায়। ব্যাপারটা কি? খুলেই বলি –
কে এই হোপ সুইং?
হোপ সুইং (Hope Schwing) আদতে লস অ্যাঞ্জেলসের ক্যালিফোর্নিয়ার বাসিন্দা। ২৪ বছর বয়সেই টিকটকে প্রভাবী হিসাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন তিনি। কখনও টিকটক, কখনও বা ইনস্টাগ্রামে নিজের ছবি এবং ভিডিয়ো পোস্ট করে উপার্জন করেন তিনি। সম্প্রতি টিকটকে নিজের একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে হোপ নিজের ‘সিঙ্গল’ থাকার কারণ জানান। হোপের দাবি, তিনি এত সুন্দরী, এতটাই লাস্যময়ী যে ছেলেরা তাঁকে প্রেম নিবেদন করতে ভয় পায়।
ঠিক কী ঘটেছে?
ভিডিয়োতে দেখা গেছে, হোপ (Hope Schwing) হতাশ মুখে বসে রয়েছেন। কেন এমন হতাশা? উত্তরে নেট নাগরিকদের তিনি জানান, প্রয়োজনের তুলনায় বেশি সুন্দরী হওয়া অপরাধ। একে নিজের জীবনের ‘পাপ’ হিসাবেই দেখছেন হোপ। হোপ বলেন, ‘‘সুন্দরী হওয়ার জন্য যে প্রেমিক জোটে না, তা নিয়ে কেউই আলোচনা করেন না। কিন্তু আমি সুন্দরী হওয়ার জন্য নিজেকেই দোষ দিই।’’ ভিডিয়োটি পোস্ট করার পর তা সমাজমাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
এরপর কি হল?
হোপ তাঁর ভিডিয়োটি পোস্ট করার কিছু ক্ষণের মধ্যেই ৩৭ লাখ নেট নাগরিক সেটি দেখে ফেলেন। এখনও পর্যন্ত ৫ লাখেরও বেশি মানুষ তাঁর ভিডিয়োতে মন্তব্যও করে ফেলেছেন। তাঁদের অধিকাংশই সমর্থন করেছেন হোপকে। কেউ বলেছেন, ‘‘তোমার ওপর দিয়ে কী যাচ্ছে তা আমি বুঝতে পারছি। আমার অবস্থাও তোমার মতো।’’ কেউ আবার বলেছেন, ‘‘সুন্দরী হওয়া যেমন জীবনের আশীর্বাদ, ঠিক তেমনই এটি এক রকম অভিশাপও।’’
আবার এক সমাজমাধ্যম ব্যবহারকারী জানিয়েছেন যে, একা থাকার যে কারণ হোপ দেখিয়েছেন তা দেখার পর তিনিও এখন এই সত্যিটাই মানতে শুরু করেছেন। কিন্তু সমাজমাধ্যম ব্যবহারকারীদের একাংশ মনে করছেন, এগুলো হোপের অতিরিক্ত অর্থ উপার্জনের ফন্দি ছাড়া আর কিছুই নয়। মিথ্যা কথা বলে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে নিজের প্রোফাইলের ‘রিচ’ বাড়াতে চাইছেন হোপ। কিন্তু ভিডিয়োটি পোস্ট করার কয়েক দিন পর হোপ মুখ খোলেন। তাঁর দাবি, তিনি একাই সুন্দরী এবং সিঙ্গল, এ কথা মিথ্যা। হোপ জানান, মহিলাদের বেশির ভাগ সময় এমনটাই বলতে শুনেছেন তিনি।
হোপ নিজে কি মনে করেন?
হোপ বলেন, ‘‘বহু মহিলাই অকপটে স্বীকার করতে ভয় পান যে, তাঁরা প্রেমের প্রস্তাব পান না। তাই তাঁরা কখনও বলেন যে, বিপরীত দিকের মানুষটি চান যে সৌন্দর্যের দিক দিয়ে তিনি মহিলাটির চেয়ে এগিয়ে থাকুক। আবার কখনও তাঁরা দাবি করেন, তাঁরা এতটাই সুন্দরী যে ছেলেরা তাঁদের কাছে ঘেঁষতেও ভয় পায়। প্রেম নিবেদন করা তো দূরের কথা।’’
হোপ জানিয়েছেন যে, তাঁর ভিডিয়োটি পোস্ট করার পর অনেক মহিলাই তাঁকে সমর্থন করেছেন। কিন্তু নিজের রূপ নিয়ে এত অহঙ্কার থাকা কি ঠিক? প্রশ্ন তুলেছেন হোপ নিজেই। অবশ্য মহিলারা সমর্থন করলেও পুরুষেরা হোপের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়েছেন। হোপকে উন্মাদও বলেছেন কেউ কেউ। কিন্তু হোপ তাতে বিন্দুমাত্র অবাক হননি। হোপ বলেছেন, ‘‘আমি স্বাবলম্বী। একা রয়েছি বলে আমার জীবনে কোনও দুঃখ নেই। ছোট থেকেই আমি এমন কোনও সম্পর্কে জড়াইনি যার কোনও ভবিষ্যৎ আছে। স্কুলে পড়ার সময় অনেক সম্পর্কে এসেছিলাম। কিন্তু একটি সম্পর্কের আয়ুও এক মাসের বেশি ছিল না।’’
আসলে ব্যাপারটা কী?
বর্তমানে কাজ নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন হোপ। তাই এখন প্রেম করার সময় নেই বলেই দাবি করেছেন তিনি। হোপ বলেন, ‘‘ক্যালিফোর্নিয়ায় সকলেই নিজের কাজ নিয়ে ব্যস্ত। তাই আমার কোনও প্রেমিক নেই বলে আমি আশ্চর্য হই না। আমার জীবনে কারও আসার থাকলে সে নিজে থেকেই আসবে। একা রয়েছি বলে সম্পর্কের পিছনে ছোটার মতো মেয়ে নই আমি।’’
অনেকের মতে, হোপ সুইংয়ের একা থাকার আসল রহস্য লুকিয়ে রয়েছে তাঁরই মধ্যে। আসলে হোপ নিজের রূপ নিয়ে এতটাই গর্বিত যে সেটা তিনি কখনও ভুলতে চান না। অতি রূপ সচেতনতা হোপের সম্পর্ক টিকতে দেয় না। হয়তো সেই হতাশার কথায় ঘুরিয়ে সোশাল মিডিয়ায় ফলাও করে প্রচার করেছেন আমেরিকান এই তরুণী।